রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে সমঝোতা স্মারক সইয়ের আশা সু চির
বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে এ সপ্তাহেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে বলে আশা করছেন মিয়ানমার নেত্রী অং সান সু চি। আসেম সম্মেলনে যোগ দিতে আসা বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মঙ্গলবার এ কথা জানান তিনি। এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে বর্ণবাদী আচরণের শামিল বলে অভিহিত করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গত ২৫ আগস্টে রাখাইন রাজ্যে জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরুর পর ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে এ সপ্তাহেই বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনারয় একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি। মিয়ানমারের রাজধানী নেপোদিতে এশিয়া-ইউরোপ মিটিং-আসেম সম্মেলনে যোগ দিতে আসা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। আগামীকাল বুধ ও বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক হবে জানিয়ে সু চি বলেন, এই সমঝোতা স্মারককের মাধ্যমে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখাইনে ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। এদিকে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনকে বর্ণবাদী আচরণের শামিল বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মঙ্গলবার অ্যামনেস্টির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে, কিভাবে রোহিঙ্গা সংকট তৈরি হয়েছে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। আর এক্ষেত্রে রাষ্ট্র নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রত্যক্ষভাবে মদদ দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা। এতে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে। অ্যামনেস্টির সিনিয়র গবেষণা পরিচালক আনা নেইস্টার বলেছেন, রাখাইন রাজ্য একটি ক্রাইম সিনে পরিণত হয়েছে। গত তিন মাসের সেনা বাহিনীর নিধনযজ্ঞের বহু আগে থেকেই সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন চলে আসছিল। আর এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষের সুযোগ করে দিয়েছে ১৯৮২ সালে নাগরিকতা আইন। এছাড়া আসেম সম্মেলনের ফাঁকে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বিশ্বনেতারা রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেন। এদিকে, গতকাল সম্মেলনে ১০ মিনিটের উদ্বোধনী বক্তব্যে মিয়ানমারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বললেও রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ তোলেননি সু চি। এর আগে চীনের দেয়া তিন দফা প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে বলে জানান সু চি।